বাক্‌ ১৫৩ ।। অমিত চক্রবর্তী


 

শুধু তার জন্যেই লিখে গেছেন নগরবাউল

 

বেদনার কথা লিখতে সে চারুলিপি ব্যবহার করে,

সহজ মোটা অক্ষরে আর আমি ভাল নেইহয় না,

এর জন্যে চাই আলগোছের আঁচড়, মুকুলিকা, মিঠে বুলির

অলকা তুলিকা, অন্তরা সঞ্চারী দিয়ে সে বেদনা কি,

কি হতে পারে, এইসব ধারণা গড়েছিল,

ধার করা আনন্দ দিয়ে বর্ডার এঁকেছিলো ছবিটার।

ভেতরে কিন্তু সেই নীল, নীলাভ, নীলাব্জ বিচ্ছেদের তান,

তুমি স্বর্গ নও, শুধু এক প্ল্যানেটারিয়াম,

পূর্বনির্ধারণের তারা দিয়ে সাজানো তোমার পরিপাটি আকাশ।

 

আহা সেইসব ছলনার টোকো রসে জরানো মন,

এ আগুন কাকে সেঁকে, কাকে পোড়ায়, অন্তরে

প্রবালপ্রাচীর, পাথুরে, চলে যাওয়ার মত এবড়োখেবড়ো

ল্যান্ডস্কেপ। তীব্র উৎসুক, তীব্র ছটফটে দিনে তার মনে হয়

অলোকরঞ্জন শুধু তার জন্যেই লিখে গেছেন নগরবাউল।



 

 

রাত্রিগাজন

 

আমাকে নিয়ে যেতে আসে যারা

রোজ রাতে, জন মুষকো মতন লোক

একবার, একবার আমি রাত পালিয়ে

টোকা মেরেছি তাদের মিলিত দরজায়,

আমি আর মর্জিনা মিলে কী হাসি সেদিন

সরু স্টিকারে লিখে রাখা

পথভোলা শত্রুর সমন্বয়, স্থানাঙ্ক বলে ওরা,

অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ সব লিখে ম্যাপ

ঝুলিয়ে রেখে এসেছি মাংসের দোকানের

বন্ধ দরজায়।

রাই জাগো, রাই জাগো,

জাগো মোহন প্রীতম,

আলো হয়, গেলো ভয় বলতে বলতে

যে লোকটি হেঁটে চলে গেলো

রাত বিরেতের বিরহী জ্যোৎস্নায়,

তার শুনি ভালোবাসার টহল এবার

দুনিয়াজোড়া গাজন, সুদূরপ্রসারী হাত।

 

 

 

 

ন্যাতানো বেলুন

 

অযত্নে আগাছায় অসজ্জিত

যে ন্যাতানো বেলুনটাকে আমি

খুঁজে চলেছি আজ

তোলপাড় করে করে বুদবুদ ব্রহ্মাণ্ড

কখনও তাকে দেখি লটকে আছে গাছে

নাগালের ঠিক বাইরে টুকি,

মই কাঁধে ভাস্করকে থামাই তখন

অবসন্ন, আবার কখনও সে

সুচিত্রার বেডরুমে পুড়ে যাচ্ছে দ্রুত

ঢোকা বারণ, উঁকি মারা, খোলস ছাড়া

কড়ানাড়া ঝাঁকি,  জগতে নাকি সবই অশোভন,

সবই সভ্যতার তোলপাড়, শান্তিভঙ্গ,

সবই জালিয়াতি হাসি, গালফোলানো

বেলুনে এখন এ দেশ সংক্রমিত, অসাড়।    

 

1 comment: